ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করার জন্য প্রথমে জানতে হবে ঘরে বসে কোন ধরনের সার্ভিস প্রদান করা যায়। এরপর জানতে হবে কিভাবে অনলাইনে সার্ভিস প্রদান করে অর্থ উপার্জন করা যায়। ঘরে বসে আয় করার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং জব যা অনলাইন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।
বর্তমানে আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডট কম, পিপল পার আওয়ার ইত্যাদি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে ঘরে বসে -ই কাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এইসব মার্কেট প্লেস গুলোতে ঘণ্টা বা চুক্তি অথবা গিগ সাার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। যে কোন প্রজেক্ট অথবা গিগ এ বর্ণিত সার্ভিস প্রদানের পর বায়ার যদি কাজের অনুমোদন দেয় তহলেই অর্থ উপার্জন নিশ্চিত করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং এর পুরো সার্ভিস ঘরে বসে দেওয়া যায়। বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ও ব্যাংক এর মাধ্যমে উপার্জন করা অর্থ খুব সহজেই দেশে আনা যায়।
ওয়েব ব্লগিং করে আয়ঃ
কনটেন্ট টেবিল
ঘরে বসে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ওয়েব ব্লগিং। এর জন্য প্রাথমিকভাবে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করতে হবে। অনেক ধরনের ফ্রি ব্লগ সাইট রয়েছে যাতে নিজের একটি ফ্রি ব্লগ খোলা যায়। নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ব্লগিং শুরু করে আর্টিকেল/গল্প/নিউজ/টিপস পোস্ট করে অর্থ উপার্জন করা যায়। ব্লগে লেখালেখি তথা বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে যখন অধিক সংখ্যক লোক ব্লগসাইট ভিজিট করবে তখন গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করেও অর্থ উপার্জন করা যায়। তখন গুগল এর দেয়া বিজ্ঞাপনে ক্লিক থেকে অনায়াসে আয় করা যায়।
গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে ওয়েব ব্লগ হতে অর্থ উপার্জনঃ
ঘরে বসে আয় করার নিশ্চিত উপায় সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো গুগল অ্যাডসেন্স থেকে অর্থ উপার্জন। ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ এ নির্ধারিত স্থানে বিজ্ঞাপন বসিয়ে অর্থ উপার্জন করা যায়। গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট এ বিজ্ঞাপন দেখানো হলে ব্যবহারকারীরা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে গুগল থেকে অর্থ উপার্জন হয়। অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে আয়ের সবচেয়ে নিরাপদ ও সহজ হলো গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন। পৃথিবীর যে কোন স্থান থাকেন না কেন নিয়মিত সাইটে ভিজিটর বাড়ানোর মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জনঃ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো নিজ ওয়েবসাইটে বা ব্লগে অন্যের প্রোডাক্ট প্রচারের মাধ্যমে বিক্রি করা। যার মাধ্যমে বিক্রিত প্রোডাক্টের দাম থেকে নির্ধারিত হারে কমিশন প্রচারকারী পেয়ে থাকে। ওয়েবসাইট বা ব্লগ আর্টিকেলে দেওয়া লিঙ্ক এর মাধ্যমে যত বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি হবে তত বেশি আয় হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য শীর্ষ ও বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে অ্যামাজন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্টের কাজ করে অর্থ উপার্জনঃ
অনলাইন মার্কেটপ্লেস ফাইভার, আপওয়ার্ক ও পিপল পার আওয়ার গুলোতে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্টৈর প্রচুর চাহিদা। ঘরে বসে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের যে কোন কোম্পানিতে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্টের কাজ করা যায়। অনলাইন মাধ্যম ফাইভার, আপওয়ার্ক এ বায়ার হতে পাওয়া কাজ সমূহ ঘরে বসেই সম্পাদন করা যায়। বর্তমান সময়ে অনলাইনে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্টের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এই সেক্টরে দক্ষতা অনুযায়ী প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করা যায়।
ইউটিউব চ্যানেল থেকে অর্থ উপার্জনঃ
বর্তমান সময়ে ঘরে বসে আয় করার সেরা ও সহজ মাধ্যম হলো ইউটিউব। ইউটিউবে চ্যানেল খোলার পর ভিডিও তৈরি করে আপলোড দিতে হবে। ভিডিও যত বেশি ভিউ হবে তত চ্যানেলের ভিউ আওয়ার বাড়বে। পাশাপাশি চ্যানেলের নির্দিষ্ট সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার পুর্ণ হতে হবে। ভিডিওতে প্রচুর ভিজিটর পেতে মানসম্পন্ন ও সৃজনশীল উপায়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে। তাই আগে থেকে ভিডিও’র টপিক নির্ধারণ করে নিতে হবে। সে অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করতে হবে। ভিডিও’র ভিউয়ার ও বিজ্ঞাপন থেকেই আয় হবে। এভাবে খুব সহজেই ইউটিউবিং এর মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করা যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জনঃ
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়ের নানা উপায় রয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, পিন্টারেস্ট, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করা যায়। আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কের্টিং এর কাজ ঘরে বসেই খুব সহজে হাতের ফোন ব্যবহার করেই করা যায়। ফেসবুক পেজ ফলোয়ার যত বেশি হবে তত আয় করতে সহজ হবে। পেজের মাধমে লাইভ বা পোস্ট করে যে কোন কোম্পানির পণ্যের প্রচারণার করে বার্তি টাকা আয় করা যায়। পাশাপাশি মনিটাইজ অন করা পেজ বিক্রি করে টাকা আয় করা যায়। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হল ফেসবুক।
কন্টেন্ট রাইটার/ আর্টিকেল লিখে অর্থ উপার্জনঃ
বর্তমান সময়ে ফ্রিলান্সার মার্কেটপ্লেস গুলোতে প্রচুর কন্টেন্ট রাইটারের চাহিদা রয়েছে। অনলাইন মাধ্যমে আয় করার জন্য ওয়েবসাইট অথবা পণ্য সম্পর্কে নানা কন্টেন্ট রাইটিং করে তা বিক্রি করে আয় করা যায়। ঘরে বসে কন্টেন্ট লেখার মাধ্যমে আয় করার জন্য এর চেয়ে সহজ আর কি হতে পারে। লেখার মান অনুযায়ী কন্টেন্ট এর দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। তাই অল্প সময়ে অধিক আয় করার সুযোগ রয়েছে শুধুমাত্র কন্টেন্ট রাইটিং বা আর্টিকেল রাইটিং এর মাধমে।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনঃ
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করা যায়। প্রথমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেম, হোস্টিং, থিম ইত্যাদি সুন্দর ভাবে সাজাতে হবে। তারপর বিভিন্ন টপিক সিলেক্ট করে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে। আর্টিকেল পাবলিশ করার পর ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়তে থাকবে। তার পরের ধাপে গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে। গুগলের বিজ্ঞাপনের অনুমোদন পাওয়ার পর ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে গুগল।
গ্রাফিকস ডিজাইন করে অর্থ উপার্জনঃ
ঘরে বসে আয় করার আরেকটি সহজ উপায় হলো গ্রাফিকস ডিজাইন। গ্রাফিকস ডিজাইন শিখে মার্কেটপ্লেস থেকে আয় করা যায়। গ্রাফিকস ডিজাইনের মাধ্যমে আয় করার জন্য এ কাজে প্রচুর দক্ষ হতে হবে। তারপর মার্কেটপ্লেস ডিজাইন সার্ভিস দিয়ে গিগ সাজাতে হবে। মার্কেটপ্লেস গুলোতে ডিজাইন বিক্রির মাধ্যমে ঘরে বসেই টাকা আয় করা যায়। বর্তমানে মার্কেটপ্লেস গুলোতে গ্রাফিকস ডিজাইনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু দক্ষতা বৃদ্ধি সৃজনশীলতা ও কাজের সঠিক উপস্থাপন।
বিদ্রঃ এছাড়া পিটিসি, ডেটা এন্ট্রি, অনলাইন টিউটর, অনুবাদ ইত্যাদি সার্ভিস প্রদান করে ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করা যায়। সকল মার্কেটপ্লেসে এইসব কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যা ঘরে বসেই প্রদান করা যায়।